১২ বছর যাবৎ নির্বাচন নেই তালোড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা কাটছেই না
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ৬নং তালোড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা কাটছেই না। এদিকে দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর যাবৎ এই নির্বাচন না হওয়ায় ১ জন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ ৩ জন মেম্বার দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের কাজ চলছে। ফলে ইউনিয়নের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।
উপজেলার তালোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন গত ২০০৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় স্বর্ণ পদকপ্রাপ্ত মোহাম্মদ আলী চতুর্থ বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচনের চার বছরের পর ২০০৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি দুষ্কৃতকারীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন। তার মৃত্যুর পর ওই বছরেই ২৬ ফেব্রুয়ারি পরিষদের মেম্বার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক সরদার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এদিকে তালোড়া ইউনিয়নের অংশ বিশেষ নিয়ে ২০১১ সালে তালোড়া পৌরসভা গঠিত হয়। ২০১২ সালে তালোড়া ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী কাহালু উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের মোট ২২টি ভোটার এলাকার সমন্বয়ে তালোড়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড গঠন ও ভোটার তালিকা পুনর্বিন্যাস করে গেজেট প্রকাশিত হয়। ২০১৩ সালের ৮ মে তালোড়া পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী খন্দকার আব্দুল জলিল মেয়র নির্বাচিত হন। তালোড়া ইউনিয়ন ও তালোড়া পৌরসভার এলাকার ওয়ার্ড পুনর্বিনাস না হওয়ায় ২০১১ সালে সারাদেশে সাধারণ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও তালোড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হয়নি। ফলে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুর পর থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক সরদার সহ তিনজন মেম্বার অশোক কুমার দাস (সাবেক ৮নং ওয়ার্ড বড়চাপড়া, কইল, বালিকা পাড়া, মোর্চা পাড়া) শফির উদ্দিন (সাবেক ৯নং ওয়ার্ড খানপুর, দেবরাশন, চকমাধাই) ও মহিলা মেম্বার মনোয়ারা বেগম(সাবেক ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড) কে নিয়ে অদ্যাবধি তালোড়া ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদে ১ জন সচিব সহ ৫ জন পুরুষ ও ২ জন মহিলা গ্রাম্য পুলিশ কর্মরত রয়েছে। বর্তমানে তালোড়া ইউনিয়নের আয়তন ১৩.৯১ বর্গ কিলোমিটার। আর লোকসংখ্যা মোট ১২ হাজার ৭ শত ৭৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬,২২৭ ও মহিলা ৬,৫৫০ জন। এদিকে দীর্ঘদিন তালোড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন না হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, তালোড়া পৌরসভার ভোটার এলাকা ও ভোটার পুনর্বিন্যাসের পর তালোড়া ইউনিয়নের বাঁকী ভোটার এলাকা ০৯ টি ওয়ার্ডে পুনর্বিন্যাস করে গত ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৮ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের এক পত্রের নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলা নির্বাচন অফিসার গত বছরের ২০ মে তালোড়া ইউনিয়নের পুনর্বিন্যাসকৃত ওয়ার্ড এলাকার ভোটার তালিকা পুনর্বিন্যাস করে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুর রহমান খান জানান, বর্তমানে পুনর্বিন্যাসকৃত ভোটার তালিকার কাজ অনেক পূর্বেই সমাপ্ত হয়েছে। সুতরাং বর্তমানে তালোড়া ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড বিভক্তি বা ভোটার তালিকা পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত কোন জটিলতা নেই। ফলে নির্বাচনের আর কোন বাধা নেই। এবিষয়ে তিনি গত ২০১৪ সালের ১৯ আগষ্ট স্থানীয় সরকার বগুড়ার উপ-পরিচালককে লিখিতভাবে অবগত করেছেন। এরপরও দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও নির্বাচন না হওয়ায় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মেহেরুল ইসলাম, মোজাফফর হোসেন ঠান্ডা জানান, তাঁরা অনেক পূর্বে থেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ লক্ষ্যে সাধারণ মানুষের মাঝে কাজও করে যাচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের শঙ্কা কাটছেই না। ভোটারদের প্রশ্ন আদৌই কি তালোড়া ইউনিয়ন নির্বাচন হবে?
১২ বছর যাবৎ নির্বাচন নেই তালোড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা কাটছেই না
Reviewed by sohel
on
09:36
Rating:
