অসাধু পুলিশের খপ্পরে পড়লে যা যা করতে হবে
পুলিশের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, তারা
দেশ সেবার এক মহান দায়িত্বে নিয়োজিত। অন্য বাহিনীর চেয়ে অনেক পরিশ্রমী আর
দেশের জন্য তারাই সবচেয়ে বেশি কাজ করেন।
তবে খারাপ পুলিশের সংখ্যা কম নয়। সারাদেশে
এমন ঘটনা অনেক আছে যেখানে পুলিশ আপনার, আমার, জনগনের অনেক ক্ষতিসাধন করে।
টাকার লোভে অনেক কিছু করে বসে। মেধাবী ছাত্র লিমনের কথা আমরা ভুলিনি।
হাজারো লিমন প্রথম আলোর দেখা না পেয়ে অজানাই থাকছে প্রতিনিয়ত। তল্লাশির
নামে নিরীহ লোকেদের পকেটে হাত দিয়ে টাকা পয়সা, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ারও
অনেক অভিযোগ ভুরি ভুরি। পকেটে হাত ঢুকিয়ে গাঁজার পুড়িয়া অথবা ইয়াবা
উদ্ধারের নাটকও সাজাতে দেখা যায়। তাহলে আমাদের কি কিছুই করার নেই ? উত্তর :
আছে……..। আপনিই পারবেন করতে।
অসাধু পুলিশের খপ্পরে পড়লে যা করতে হবে :
ধরে নিন যেকোন ভাবেই আপনি বিনা অপরাধে খারাপ পুলিশের খপ্পরে পড়েছেন। তাহলে নিচের পদক্ষেপ অনুসরণ করুন। কাজে দেবে।
চাকুরীর ভয় সবার আছে। পুলিশের সেটা আরো বেশি আছে। যতই ঘুষ খাকনা কেন ধরা পড়লে রক্ষা নেই।
১. ইউনিফর্ম পড়া পুলিশ হলে প্রথমেই বুকে থাকা নামটি দেখে নিন। (সিভিল হলে তার নাম, র্যাঙ্ক, থানা বা কোন ইউনিট ইত্যাদি জেনে নিন)।
২. পুলিশের কয়জন সৎ বড় কর্তার নাম মুখস্থ করে রাখুন। (ঐ এলাকার এসি,
এডিসি ক্রাইম, ডিসি/ এএসপি সার্কেল, এ্যাডিশনাল এসপি, এসপি) আইজিপি হলে হবে
না। কেননা, সবাই জানে তার নাম। পুলিশে ধরলেই জানিয়ে দিন ঐ পুলিশকে যে
“আমাকে বিনা কারণে কিছু করলে আমি ঐ অফিসারের কাছে আপনার/আপনাদের বিরুদ্ধে
অভিযোগ করব। লিখিত অভিযোগ মৌখিকের চেয়ে লিখিত কাজ হয় ভাল। মৌখিক কথার
এ্যাকশন হলো কিনা আপনি জানতে পারবেন না। তবে ইন্সট্যান্ট কাজ হবে।
৩. একান্তই কখনও কোন পুলিশের পাল্লায় পড়ে টাকা খোয়ালে সংশ্লিষ্ট এলাকার
ডিসি (জেলা শহর হলে এসপি) বরাবর অভিযোগ দাখিল করুন। আইজিপি এবং কমিশনার
অফিসেও প্রেরণ করতে পারেন। একটা লিখে তার ফটোকপি পাঠান এসব জায়গায়।
৪. আপনি মেট্টোপলিটনের আওতাভুক্ত হলে সকল ডিসির নাম্বার সংরক্ষণ করুণ।
মেট্টোপলিটনের বাইরে হলে এসপির নাম্বার সংরক্ষণ করুণ। নাম্বারের জন্য
বাংলাদেশ পুলিশ এ্যাপসটি অবশ্যই আপনার ফোনে ডাউনলোড করে নিবেন গুগুল প্লে
স্টোর থেকে। প্রয়োজনে এসপি বা ডিসিকে সরাসরি ফোন করুণ।
৫. আপনি যদি অপরাধ না করেন, পুলিশ কর্তৃক যে কোন প্রকার নির্যাতনের স্বীকার হলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান। সাংবাদিকদের জানান।
৬.
অপরাধ প্রবণ পুলিশদের মনোবল সব সময় কম থাকে, তাই আপনি যদি তাদের ঠিক ভাবে
ম্যানেজ করতে পারেন, তারা আপনার সাথে কঠোর হওয়ার সাহস পাবে না।
৭. আপনি নিজে যদি অপরাধী না হন, কোন ভাবেই পুলিশের জেরাতে ভয় পাবেন না।
যা সত্যি তাই খোলা-মেলা ভাবে বলুন। কখনও মিথ্যার আশ্রয় নিবেন না।
বুদ্ধিমানের মত কাজ করুন।
৮. সবচেয়ে বড় কথা আইনের প্রতি সব সময় শ্রদ্ধাশীল থাকুন এবং নিজের উপর
আস্থা রাখুন। পুলিশ দেখে কখনও ভয় পাবেন না। কেননা, পুলিশ রয়েছে আপনাকে
রক্ষা করতে, আপনার ক্ষতি করতে নয়।
৯. পুলিশ ফোনে টাকা চাইলে সাথে সাথে
রেকর্ড করতে করতে তার সাথে স্বাভাবিকভাবেই কথা বলতে থাকুন, কতটাকা, কিভাবে
দিতে হবে, কখন নেবেন, আপনার নাম কি, কোন থানা বা ফাঁড়ী, মামলা বা অভিযোগ
কার বিরুদ্ধে, কে করেছে ইত্যাদি কথার মধ্যে সংযুক্ত রাখুন। ব্যাস এটা
অভিযোগের সাথে জমা দিন ঐ এলাকার এসি, এডিসি ক্রাইম, ডিসি, কমিশনার অথবা এএসপি সার্কেল, এ্যাডিশনাল এসপি, এসপি বরাবর।
১০. জায়গা-জমি সংক্রান্ত কোন কিছুই
পুলিশের করার কোন আইনগত অধিকার নেই (শুধু কোর্টের আদেশ পালন করতে পারবে)।
তবে যদি কোন জায়গা নিয়ে শান্তি ভঙ্গের আশংখা দেখা দেয় তাহলে তারা একটি
হুশিয়ারি নোটিশ জারি করতে পারে, থানায় আপনার জমির কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত
হতে বলতে পারে (তার সাধ্য নেই কোন রায় দেয়ার…. কাগজ দেখেই শোধ…. বোগাজ।
জায়গা জমি সম্পুর্ন দেওয়ানী আদালতের বিষয়, পুলিশের নয়। পুলিশ শুধু ফৌজদারী
বিষয় নিয়ে কাজ করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত)। সুতরাং আপনার জায়গা নিয়ে কিছু করতে
গেলে স্মার্টলি তার সাথে তার এখতিয়ার নিয়ে কথা বলুন। কোর্টের কাগজ আছে কিনা
জানতে চান।
স্পেশাল
স্টেপ : পুলিশ আপনার সাথে অবৈধ কিছু করলে জেলায় এসপি আর মেট্রোতে ঐ
এলাকার ডিসিকে ফোন করার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করুন (ফোন করতেও পারেন
ইন্সট্যান্ট ঘটনার সময় ), লিখিত অভিযোগ এক কপি কমিশনারের কাছে পাঠান। একটা
অভিযোগ সিকিউরিটি সেল, পুলিশ হেডকোয়ার্টার, ফুলবাড়িয়া, ঢাকা বরাবর ঐ
অফিসারের বিরুদ্ধে পাঠান। (থানায় বলে লাভ হ্ওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম)। এরপর
অপেক্ষা করতে থাকুন আর দেখুন ঝাড়ের বাঁশ কিভাবে ঐ খারাপ অফিসারের কাছে
পৌছায়।
জিডি করতে গেলে “ভাই খরচ পাতি দেন” । এক
টাকাও দেবেন না। পারলে ফোনের রেকর্ডার চালু করে কথা বলুন, খরচ পাতির কথা
কথা বললে তাকে শুনিয়ে দিন যে তার কথা আপনার কাছে রেকর্ড করা হয়েছে এবং আপনি
উপরে উল্লেখিত ব্যাক্তিদের কাছে অভিযোগ করবেন।
জিডি/ অভিযোগ / মামলা কোনটা করতেই কোন
টাকা লাগেনা। আসল কথা হলো পুলিশের সাথে জনগনের আইনের কোথাও কোন টাকার
লেনদেনের কথা নেই। পুলিশের সাথে টাকা লেনদেনটাই অবৈধ। একটি পয়সাও না।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন। আইন জানুন। আইন মানুন।
অসাধু পুলিশের খপ্পরে পড়লে যা যা করতে হবে
Reviewed by sohel
on
07:53
Rating:
